চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়

 স্ট্রবেরি কিভাবে খেতে হয়চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানতে চলেছি। চুল পড়া একটি সাধারণ সমস্যা যা নানা বয়সের এবং বিভিন্ন মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। চুল পড়ার সমস্যা অনেকেরই হতে পারে।
চুল-পড়ার-কারণ-গুলোচুল পড়ার সমস্যাটি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে যেমন জেনেটিক্স, পরিবেশগত পরিবর্তন, স্ট্রেস, স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যা ইত্যাদি। তবে সঠিক প্রতিকার ও প্রতিরোধের মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। আজকের আর্টিকেলে আমরা চুল পড়ার কারণ প্রতিকার এবং প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

পোস্ট সূচিপত্র: চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়

চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় গুলো জানুন

চুল পড়া একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন বয়সের এবং লিঙ্গের মানুষের সাথে হয়ে থাকে। চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যেমন জেনেটিক্স, হরমোনাল পরিবর্তন, স্ট্রেস, পুষ্টির অভাব এবং স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যা। সঠিক প্রতিকার এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। নিম্নে চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় গুলো দেখানো হলো:

চুল পড়ার প্রতিকার: নারকেল তেল চুলের জন্য একটি প্রাকৃতিক উপকারী উপাদান। এতে থাকা লরিক এসিড চুলের মূলকে শক্তিশালী করে এবং চুলের সুষমায়ন বজায় রাখে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার নারকেল তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যাবে। এছাড়াও মেথির ব্যবহার চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এতে থাকা প্রোটিন এবং নিওকটিনিক এসিড চুলের গঠন উন্নত করে। মেথি রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে পেস্ট তৈরি করে চুলে লাগান ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। অলিভ অয়েল চুলের জন্য খুবই উপকারী কারণ এতে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চুলে পড়া কমায় এটি চুলের স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন এবং পরদিন শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়াও এলোভেরা চুলের স্ক্যাল্পকে প্রাকৃতিক পুষ্টি দেয় এবং সতেজ অনুভূতি প্রদান করে চুলের। আবার পেয়াজের রসে থাকা সালফার চুলের গঠন শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে পেঁয়াজের রস চুলের স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এতে চুল পড়া বন্ধ হতে পারে। এছাড়াও আপনি চুল পরা প্রতিবাদ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। তবে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। এভাবে এই নিয়মগুলো মেনে আপনি আপনার চুল পড়ার প্রতিকার করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ চা পাতা, লেবু দিয়ে পাকা চুল কালো করার ২০ টি উপায়

চুল পড়া প্রতিরোধের উপায়: চুল পড়া প্রতিরোধ করতে চাইলে আপনাকে সুষম খাদ্য খেতে হবে। কারণ সুষম খাদ্য চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অপরিহার্য। প্রোটিন ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি এবং ফলমূল চুলের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত চিন্তা চুল পড়ার একটি বড় কারণ। তাই স্ট্রেস কমানোর জন্য নিয়মিত মেডিটেশন, যোগব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম করা উচিত। 

এছাড়াও নিয়মিত চুলের যত্ন করা উচিত সেজন্য সঠিক শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুলে অতিরিক্ত রাসায়নিক এবং হিট স্টাইলিং পণ্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। নিয়মিত চুলের যত্ন এবং নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করুন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন কারণ এটি চুলের শুষ্কতা কমায়। যদি চুল পড়ার সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এর জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সমস্যার মূল কারণ নির্ধারণ করুন এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

চুল পড়ার কারণ গুলো জেনে নিন

চুল পড়া সমস্যার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যা আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করছে। এই সমস্যা গুলো আমাদেরকে মানসিক ভাবে দুর্বল করে তুলছে। চুল পড়ার অনেক কারণ রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে জানতে পারলে আমরা এর প্রতিরোধ বা প্রতিকার করতে পারব।

চুল-পড়ার-আধুনিক-প্রতিকারতাই চুল পড়ার কারণ গুলো সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। চুল পড়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কিছু কারণ নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো:

জেনেটিক্স: এন্ড্রোজেনেটিক এলোপেশিয়া বা পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে চুল পড়া জিনগত প্রবণতা অন্যতম প্রধান কারণ। এটি মূলত পরিবারের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত এবং সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব বাড়তে থাকে।

হরমোনাল পরিবর্তন: হরমোনাল ইমব্যালেন্স যেমন থাইরয়েড সমস্যা, গর্ভাবস্থা, ওজন বৃদ্ধি অথবা মেনোপজ চুল পড়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

মানসিক চাপ: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ বা শারীরিক চাপ চুল পড়ার একটি বড় কারণ হতে পারে। এটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময়ে অতিরিক্ত চুল পড়ার রূপে প্রকাশিত হয়। যা সাধারণত টেলোজেন এফলুভিয়াম নামে পরিচিত।

পুষ্টির অভাব: ভিটামিন ডি, আয়রন, জিংক এবং প্রোটিনের অভাব চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ। সুষম খাদ্য গ্রহণের অভাবে চুল দুর্বল হয়ে যায় এবং পড়ে যায়।

বৈশিষ্টিক চুলের যত্ন: অতিরিক্ত হিট স্টাইলিং এবং রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং চুল কালার করার কারণেও চুল পড়তে পারে। অতিরিক্ত হিট স্টাইলিং এবং রাসায়নিক প্রক্রিয়া আমাদের চুলের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

স্বাস্থ্যগত সমস্যা: পোলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, অটোমিউন ডিজিজ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা চুল পড়ার পেছনে দায়ী হতে পারে।

চুল পড়ার প্রাকৃতিক প্রতিকার গুলো জানুন

চুল পড়া এক ধরনের সমস্যা যা বিভিন্ন বয়সের মানুষের সঙ্গে হতে পারে। কিছু মানুষের জন্য এটি একটি সাময়িক সমস্যা তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠতে পারে। নিম্নে চুল পড়ার প্রাকৃতিক প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

  • নারকেল তেল: নারকেল তেল চুলের জন্য একটি প্রাকৃতিক সুপার ফুড। এতে রয়েছে ফ্যাটি এসিড যা চুলেকে শক্তিশালী করে এবং চুলের সুষমায়ন বজায় রাখে। নারকেল তেল চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেললে আপনি রেজাল্ট তৎক্ষণাৎ দেখতে পাবেন। এটি চুল কন্ডিশনিং করতে এবং প্রাকৃতিক পুষ্টি দিতে সাহায্য করে।
  • অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এটি চুলের রুটে ম্যাসাজ করে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। অলিভ অয়েল চুলের শুষ্কতা কমাতে এবং রুক্ষতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • মেথি: মেথির বীজ চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ এতে রয়েছে প্রোটিন এবং নিকোটিনিক এসিড যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তাই মেথি বীজ ভিজিয়ে রেখে পেস্ট করে চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • অ্যামন্ড অয়েল: অ্যামন্ড অয়েল ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়াম এ পরিপূর্ণ যা চুলের বৃদ্ধি এবং সুষমায়ন করতে সাহায্য করে। এটি চুলের স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে ৩০ মিনিট রেখে গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে তাহলে এর ফলাফল লক্ষ্য করা যাবে।
  • অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক এতে থাকা এনজাইম ও ভিটামিন চুলকে মজবুত করতে সহায়ক। এটি চুলে লাগিয়ে গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • পেঁয়াজের রস: এছাড়াও পেঁয়াজের রসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি চুলের স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এভাবে আপনি প্রাকৃতিক ভাবে চুলের যত্ন করে চুল পড়া প্রতিকার করতে পারবেন খুব সহজে।

চুল পড়ার আধুনিক প্রতিকার গুলো জানুন

চুল পড়ার যেমন প্রাকৃতিক প্রতিকার রয়েছে ঠিক তেমনি আধুনিক প্রতিকারও রয়েছে। নিম্নে চুল পড়ার আধুনিক প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

  • মিনক্সিডিল: মিনক্সিডিল একটি ওষুধ যা চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল জন্মাতে সাহায্য করে। এটি চুলের স্ক্যাল্পে প্রয়োগ করা হয় এবং এটি চুল পড়া রোধে সাহায্য করে।
  • ফিনাস্টেরাইড: এটি একটি মৌখিক ঔষধ যা পুরুষদের জন্য চুল পড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি হরমোনাল পরিবর্তন করে চুল পড়ার হার কমায়। এটা শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করা উচিত।
  • লেজার থেরাপি: লেজার থেরাপি চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে। লেজার লাইট চুলের স্ক্যাল্পে প্রেরিত করে চুলের কোষ গুলোকে উদ্দীপিত করা হয়।
  • প্লাজমা থেরাপি: প্লাজমা থেরাপি চুলের বৃদ্ধিতে একটা আধুনিক চিকিৎসা। এতে রোগীর রক্ত প্লাজমা নিয়ে তা চুলের স্ক্যাল্পে ইনজেক্ট করা হয়। এটি চুলকে উদ্দীপিত করে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট: হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট একটি সার্জিক্যাল প্রক্রিয়া চুলের মন্দ স্থানে নতুন চুল স্থানান্তরিত করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল প্রদান করে তবে এটি একটি ব্যয় সাপেক্ষ এবং সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।
  • হরমোনাল থেরাপি: হরমোনাল ইমব্যালেন্স এর কারণে চুল পড়া শুরু হলে হরমোনাল থেরাপি দেওয়া হয়। একটি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এভাবে বিভিন্ন উপায়ে চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় মেনে চুল পড়া কমানো সম্ভব।

চুল পড়া প্রতিরোধের প্রাকৃতিক উপায়

চুল পড়া প্রতিরোধের জন্য প্রাকৃতিক উপায় অনেকই রয়েছে। চুল পড়া প্রতিরোধের জন্য প্রাকৃতিক উপায় গুলো অনেক কাজ করে। এক্ষেত্রে অ্যারগান তেল চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে এটি চুলকে ময়শ্চেরাইজার করে এবং ভিটামিন অক্সিডেন্টেপূর্ণ। এছাড়াও পিপল পাতা চুলের জন্য খুবই উপকারী এটি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। এলোভেরা জেল চুলের জন্য খুবই ভালো এটি চুলের স্ক্যাল্প শীতল রাখে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও পেঁপের রস চুলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন কারণ পেঁপের রস চুলের বৃদ্ধি উন্নত করে এবং চুলে পুষ্টি যোগায়। নারকেল তেল চুল এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকারী এটি চুলকে ময়েশ্চারাইজার করে এবং চুল পড়া কমায়।

এছাড়াও তুলসী পাতা চুলের জন্য অনেক উপকারী। আবার আপনি তুলসী পাতার রস ও লেবুর রসের মিশ্রণে প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন এটি চুলের পুষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে। চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সুষম খাবার খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। সেজন্য আপনাকে ভিটামিন এ, সি, ডি এবং ই এবং আয়রনে পরিপূর্ণ খাবার খেতে হবে। এই প্রাকৃতিক উপায় গুলোর পাশাপাশি সাস্থ্যকর জীবনযাপন ও পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। এভাবে বিভিন্ন উপায়ে চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় মেনে চুল পড়া কমানো যতে পারে।

চুল পড়া প্রতিরোধের আধুনিক উপায়

বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে আজ অনেক কিছু আবিষ্কৃত হয়েছে। চুল পড়া প্রতিরোধের আধুনিক উপায় গুলো প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার অগ্রগতির ফলস্বরূপ। এখ বিভিন্ন ঔষধের মাধ্যমে চুল পড়া প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়াও লেজার থেরাপি বা প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে চুল পড়া প্রতিরোধ করা যায়। এই থেরাপি গুলোর মাধ্যমে চুল বৃদ্ধি হতে সাহায্য করে। এছাড়াও এখন নতুন চুল গজানোর উপায় রয়েছে। সেজন্য আপনাকে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি যেমন ফলিকলইউনিট এক্সট্রাকশন অথবা ফোলিকল ইউনিট ট্রান্সপ্লান্টেশন করতে হবে যা চুলের রুট গুলো এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করে। এটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে কাজ করে থাকে।

এছাড়া বিভিন্ন হরমোনাল থেরাপি রয়েছে। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে আমাদের চুল পড়া বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে হরমোনাল থেরাপি দেওয়া হলে হরমোনের অসামঞ্জস্যতার কারণে চুল পড়া বিশেষজ্ঞরা তা কমিয়ে দিতে পারে। এছাড়াও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্ক্যাল্পে ড্রাগস প্রদান করা হয় যা চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। চুল পড়া প্রতিরোধের জন্য আধুনিক উপায় গুলির জন্য কিছু সময় এবং ধৈর্য প্রয়োজন হতে পারে। তাই এ ধরনের চিকিৎসার আগে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।

চুল পড়া প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন হেয়ার প্যাক

প্রচুর পড়া প্রতিরোধ করার জন্য বিভিন্ন হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে যা প্রাকৃতিক উপাদানের মিশ্রণ দিয়ে তৈরি করা হয়। নিম্নে কিছু কার্যকর হেয়ার প্যাক এর রেসিপি দেওয়া হলো:

  • ডিম ও দই এর প্যাক: একটি ডিম ও দুই টেবিল চামচ দই নিতে হবে। এক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশ এবং দই দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং স্ক্যাল্প ও চুলে ভালো করে লাগাতে হবে। ৩০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলকে শক্তিশালী করে।
  • মেথি: ২ টেবিল চামচ মেথি বীজ ও দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। আধঘন্টা বা রাতভর বীজ গুলো ভিজিয়ে রাখুন। এরপর বীজ গুলো পেস্ট করে নারকেল তেল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। চুল ও স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুল পড়া কমায়। 
  • এলোভেরা ও নারিকেল তেলের প্যাক: এলোভেরা জেল এবং নারকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন স্ক্যাল্প এবং চুলে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এলোভেরা চুলের বৃদ্ধি এবং নারিকেল তেল চুলকে মশ্চারাইজ করে।
  • হেনা ও লেবুর প্যাক: হেনা পাউডার এবং লেবুর রস মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এটি চুলের জন্য অনেক কার্যকরী এবং লেবুর রস চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
  • বেসন ও দই এর প্যাক: বেসন এবং দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন স্ক্যাল্প এবং চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন এটি চুল এর শক্তি বাড়ায় এবং দই চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে।
  • পেঁপে ও মধুর প্যাক: পেঁপে চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং মধু চুলের স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য উন্নত করে। তাই পেঁপের পেস্ট এবং মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করুন তারপর চুল ও স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের অভ্যাস

চুল পড়া প্রতিকার এবং প্রতিরোধের জন্য কিছু সাধারণ অভ্যাস এর ফলে জীবন যাপন পরিবর্তন করা যেতে পারে যা চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এজন্য আমাদেরকে সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

চুল-পড়া-প্রতিরোধের-জন্য-সাধারণ-পরামর্শঅতিরিক্ত চিন্তা করা যাবে না মানসিক চাপ চুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তাই যোগব্যায়াম, মেডিটেশন ইত্যাদি করতে হবে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। নিয়মিত তেল দেওয়ার অভ্যাস করতে হবে এবং মাঝে মাঝে চুল কাটতে হবে চুলের টগা। অযথা চুল টানবেন না চুলে মৃদু ভাবে চিরুনি ব্যবহার করুন।

চুল পড়া প্রতিরোধের জন্য সাধারণ পরামর্শ

চুল পড়া প্রতিরোধের জন্য কিছু সাধারণ পরামর্শ অনুসরণ করা যেতে পারে যা চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং সমস্যা আমাদের সাহায্য করে। এজন্য আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে চুলের ধরন অনুযায়ী। অত্যাধিক রাসায়নিক পণ্য এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়াও হালকা চুলের যত্ন নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ কপালে নতুন চুল গজানোর ১০টি উপায়

এছাড়াও নিয়মিত তেল ম্যাসাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি নারকেল তেল, অলিভ অয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনার চুলের বৃদ্ধি ঘটে এবং স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য উন্নত থাকে। চুলের ডগা ফাটা রোধ করতে নিয়মিত চুল কাটুন এতে চুলের বৃদ্ধি হয় এবং চুল সুস্থ থাকে।

আমাদের শেষ কথা

চুল পড়া সমস্যা যদি বাড়তেই থাকে তাহলে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা ডার্মাটোলজিস্ট এর সাথে পরামর্শ করুন। অনেক সময় পুষ্টির অভাব চুল পড়ার কারণ হতে পারে। সাধারণত এই পরামর্শ গুলো চুল পড়া কমাতে সাহায্য করতে পারেন এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা চুল পড়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url