অতিথি পাখির নামের তালিকা - কোন দেশ থেকে আসে
অতিথি পাখি হল এমন এক ধরনের পাখি যেগুলো নির্দিষ্ট কোন সময়ে এক দেশ থেকে অন্য
দেশে পাড়ি জমায়। অত্যন্ত শীতকালীন স্থান থেকে প্রশ্ন স্থানে অতিথির মত অবস্থান
করে। আবার তাদের বাসস্থানে উষ্ণ আবহাওয়া ফিরে আসলে তারা উষ্ণ অঞ্চলে তাদের
বাসস্থানে ফিরে যাই। অতিথি পাখির নামের তালিকা অনেকেই খোঁজ করেন। অতিথি পাখি কোন
দেশ থেকে আসে তা অনেকেই জানেন না।
পতিথীর মতো আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের পাখি শীতকালীন সময় দেখতে পাওয়া যায়।
মূলত আমরা এই পাখিগুলোকেই অতিথি পাখি নামে চিনি। অতিথি পাখির নামের তালিকা ও
অতিথি পাখি কোন দেশ থেকে আসে, অতিথি পাখি সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয় জানতে হলে
পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ অতিথি পাখির নামের তালিকা - অতিথি পাখি কোন দেশ থেকে আসে
ভূমিকাঃ
অতিথি পাখি হল কোন এক নির্দিষ্ট সময়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণকারী পাখি।
সাধারণত শীতকালীন সময়ে অত্যন্ত শীতকালীন দেশ থেকে তারা উষ্ণ কালীন দেশে পাড়ি
জামায় জীবনধারণের উদ্দেশ্যে। বিশেষ করে সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া থেকে
শীতকালীন সময়ে উষ্ণ কালীন অঞ্চলে অতিথি পাখিরা চলে আসে।
তারা যে দেশগুলোতে পূর্বে ভাস করতো ওই দেশগুলোর আবহাওয়া উষ্ণ হওয়া মাত্রই তারা
পুনরায় ওই দেশে পাড়ি জমায়। অতিথি পাখি দীর্ঘ যাত্রা করতে পারে। অতিথি পাখির
মস্তিষ্ক অত্যন্ত প্রখর। অতিথি পাখি হাজার হাজার পথ পাড়ি দেয় কিন্তু সেগুলো
কখনোই ভোলে না। তারা পুনরায় পূর্বের মতো আবার দীর্ঘদিন পর তাদের বাসস্থানে ফিরে
যায়।
আরো পড়ুনঃ কোয়েল পাখির ডিমের ১০টি ক্ষতিকর দিক
অতিথি পাখিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। অতিথি পাখিরা বিভিন্ন
ধরনের খাবার খায় এর মধ্যে শামুক, কীটপতঙ্গ, মাছ, জলজ উদ্ভিদ। অতিথি পাখিরা
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এদেশে আসা অতিথি পাখিরা
জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত সমৃদ্ধির একটি চিহ্ন।
অতিথি পাখির নামের তালিকা
আমাদের দেশে বেশ কিছু অতিথি পাখি দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে
ভিন্ন ভিন্ন অতিথি পাখিরা বিচরণ করে। মূলত বাংলাদেশের শীতকালীন সময়ে প্রচুর
পরিমাণে অতিথি পাখি দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে অক্টোবর - মার্চ মাস পর্যন্ত
প্রতিটি পাখি বিচরণ করে। অনেকে নিয়মিত অতিথি পাখির নামের তালিকা সম্পর্কে খোঁজ
করেন।
বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ভিন্ন ভিন্ন জাতের অতিথি পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এ
পাখিগুলো দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। এদের চলাফেরা, বাসা তৈরীর ধরন, খাবার প্রত্যেকটি
আমাদের দেশীয় পাখির চাইতে আলাদা। নিচে অতিথি পাখির নামের তালিকা দেওয়া হলোঃ
- পিঁপড়ে পাখি
- শামুকখোল পাখি
- নীলকন্ঠ পাখি
- খলি হাঁস
- কুটুম পাখি
- লালসারস
- গাংচিল
- রাজহাঁস
- শির্ণবিল পাখি
- শঙ্খচূড় পাখি
- সারস
- রাজহস
- লাল শির হাঁস
- চখাচখি
- জলপিপি
- পাতি সরালি
- হরিয়াল
এছাড়াও স্থানভেদে বেশ কিছু ভিন্ন ভিন্ন অতিথি পাখি দেখা যায়। প্রিয় পাঠক উপরে
বেশ কিছু অতিথি পাখির নামের তালিকা দিয়েছি। এছাড়াও বাংলাদেশে নাম না জানা আরও
অনেক অতিথি পাখি বিচরণ করে। এ পাখিগুলো শীতকালীন সময় বাংলাদেশের অবস্থান করে
পরবর্তীতে তাদের বসবাসরত স্থান গুলোতে অতিরিক্ত শীত গিয়ে উষ্ণ আবহাওয়া পড়লেই
এই অতিথি পাখিগুলো সে দেশে পাড়ি জমায়। আশা করি অতিথি পাখির নামের তালিকা
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
অতিথি পাখি কোন দেশ থেকে আসে
অতিথি পাখি কোন দেশ থেকে আসে তা অনেকেই জানেন না। অতিথি পাখি মূলত অতিরিক্ত
শীতকালীন দেশগুলো থেকে উষ্ণ কালীন অঞ্চলে আসে। অতিথি পাখি এমন এক পাখি যেগুলো
শীতকালীন ঋতুতে ঠান্ডা দেশ থেকে উষ্ণ দেশগুলোতে আসে। গরমের আবহাওয়া শুরু হওয়া
মাত্র তারা নিজের দেশে পুনরায় ফিরে যায়।
অতিথি পাখি মূলত সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, তিব্বত, রাশিয়া, ইউরোপ, এবং
অন্যান্য ঠান্ডা অঞ্চল থেকে উষ্ণ অঞ্চলের দেশ গুলোতে আসে। অতিথি পাখিরা মূলত
তাপমাত্রার অভাবের কারণে শীতকালে উষ্ণ কালীন অঞ্চলের দেশগুলোতে চলে আসে। যে
দেশগুলোতে তারা খাবার সহজে পাই ও সুরক্ষিত থাকে সে দেশ গুলোতে তারা কয়েক মাস
অবস্থান করে।
সাইবেরিয়া থেকে আসা পাখিরা সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থানে ও অন্যান্য
দেশগুলোতে অবস্থান করে। আশা করি অতিথি পাখি কোন দেশ থেকে আসে সে সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন।
অতিথি পাখি কখন আসে
অতিথি পাখি কোন দেশ থেকে আসে, অতিথি পাখি কখন আসে তা অনেকেই জানেন না। অতিথি পাখি
মূলত শীতকালীন সময়ে আসে। বিশেষ করে অক্টোবর থেকে মার্চ মাসে অতিথি পাখি
বাংলাদেশে আসে। এ সময় অত্যন্ত শীতকালীন দেশ থেকে অতিথি পাখিরা বাংলাদেশ সহ
আশেপাশের দেশগুলোতে অবস্থান করে। আবার এই দেশগুলোতে উষ্ণ তাপমাত্রা পড়তে শুরু
করা মাত্রই তারা তাদের দেশ গুলোতে পাড়ি জমায়।
অতিথি পাখি কাকে বলে
নির্দিষ্ট সময়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে কিছু সময় অবস্থান করা পাখিদের কি মূলত
অতিথি পাখি বলা হয়। অতিথি পাখি শীতকালীন সময়ে অল্প কিছু সময়ের জন্য উষ্ণ কালীন
অঞ্চলে অবস্থান করে। কিছু সংখ্যক পাখি অতিরিক্ত শীতকালীন সময়ে উষ্ণ কালীন অঞ্চলে
জীবিকা নির্বাহের জন্য পাড়ি জমায় এই পাখি গুলোয় মূলত অতিথি পাখি নামে পরিচিত।
পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা
পরিযায়ী পাখি মূলত অতিথি পাখি নামে পরিচিত। অনেকে অতিথি পাখির নামের তালিকা,
পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা জানতে চান। পরিযায়ী পাখি অতিথি পাখি। সাধারণত
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের ভাষার পার্থক্য অনুযায়ী অতিথি পাখিকে পরিযায়ী পাখি
নামে ডাকা হয়। বাংলাদেশে বেশ কিছু পরিযায়ী পাখি দেখতে পাওয়া যায়।
ভিন্ন ভিন্ন রং, আকার, ডাক, খাবার খাওয়ার পার্থক্য রয়েছে পরিযায়ী পাখির।
পরিযায়ী পাখিগুলো মূলত দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। পরিযায়ী পাখি শীতকালীন সময়
বাংলাদেশে অবস্থান করে এবং উষ্ণ তাপমাত্রা শুরু হওয়া মাত্রই পরিযায়ী পাখি তাদের
দেশে ফিরে যায়। নিচে পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা গুলো দেওয়া হলঃ
- পিঁপড়ে পাখি
- শামুকখোল পাখি
- নীলকন্ঠ পাখি
- খলি হাঁস
- কুটুম পাখি
- লালসারস
- গাংচিল
- রাজহাঁস
- শির্ণবিল পাখি
- শঙ্খচূড় পাখি
- সারস
- লাল শিরহাঁস
- চখাচখি
- জলপিপি
- পাতি সরালি
- হরিয়াল
প্রিয় পাঠক উপরে বেশ কিছু পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা দিয়েছি। তবে স্থানভেদে
এছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন নামের ও ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পরিযায়ী পাখি দেখা যেতে পারে।
বাংলাদেশের অতিথি পাখি
বাংলাদেশী শীতকালীন সময়ে বেশ কিছু অতিথি পাখি দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের
অতিথি পাখি শীতকালে আসে। সাধারণত অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত অতিথি পাখিরা
বাংলাদেশের অবস্থান করে। অতিথি পাখিরা ঠান্ডা দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে ও
বাংলাদেশের আশেপাশের অঞ্চল গুলোতে আসে। অতিথি পাখি মূলত সাইবেরিয়া, রাশিয়া,
মঙ্গোলিয়া, চীন, ইউরোপ, থেকে আসে।
বাংলাদেশে অতিথি পাখির আগমনের প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশের শীতকালীন সময় মৃদু এবং
খাদ্যের পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যবস্থা আছে। বাংলাদেশে শীতকালীন সময় বেশ কিছু অতিথি
পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, মংলা, সিলেট
অঞ্চল গুলোতে সবচেয়ে বেশি অতিথি পাখি অবস্থান করে।
অতিথি পাখি গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখতে পাওয়া যায় পিঁপড়ে পাখি, শামুকখোল,
নীলকন্ঠ পাখি, খলি হাঁস, রাজহাঁস, গাংচিল, জলপিলি পাখি অন্যতম। বাংলাদেশের অতিথি
পাখি গুলোর প্রধান খাবার শামুক, মাছ, পোকামাকড়, জলজ উদ্ভিদ, শ্যাওলা। এছাড়াও
প্রজাতি ভেদে অতিথি পাখিগুলো ভিন্ন ভিন্ন খাবার খায়। অতিথি পাখি বাংলাদেশের
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
এদেশে আসা অতিথি পাখিরা আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত সমৃদ্ধির একটি
চিহ্ন। তাই অতিথি পাখিদের আমরা কখনোয় ধরবো না। অতিথি পাখি আমাদের দেশের সৌন্দর্য
বৃদ্ধি করে। তাই অতিথি পাখিদের রক্ষা করা আমাদের একান্তই দায়িত্ব।
অতিথি পাখির বৈশিষ্ট্য
অনেকে নিয়মিত অতিথি পাখির বৈশিষ্ট্য অতিথি পাখি কোন দেশ থেকে আসে সে সম্পর্কে
জানতে চান। অতিথি পাখি মূলত ঠান্ডা অঞ্চলের পাখি। অতিথি পাখি শীতকালীন সময়ে উষ্ণ
অঞ্চলে চলে আসে। অতিথি পাখিদের মস্তিষ্কে এক ধরনের জীন থাকে যা তাদের স্মরণ
শক্তিকে বৃদ্ধি করে। তারা যে কোন দেশ থেকে এসে পথ নির্দেশনা করে সহজে পুনরায়
ফেরত যেতে পারে।
অতিথি পাখিরা দীর্ঘ যাত্রা করে এবং বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে চলাফেরা করতে পারে।
আমাদের দেশে মূলত ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। অতিথি পাখিরা ১৩০০ মিটার
উঁচু দিয়ে উঠতে পারেন। বড় অতিথি পাখিরা ২৪ ঘন্টায় ২৫০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
ফলে তারা এক দেশ থেকে এসে সহজেই তাদের গন্তব্যস্থলে ফেরত যেতে পারে।
অতিথি পাখি কেন আসে
অতিথি পাখি কেন আসে তা অনেকেই জানেন না। অতিথি পাখি মূলত শীতকালীন অঞ্চলে
অতিরিক্ত শীতকালীন তাপমাত্রা থেকে বাঁচতে, খাবার যোগানে উষ্ণ কালীন অঞ্চল গুলোতে
অবস্থান করে। অতিথি পাখিরা অতিরিক্ত শীত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে উষ্ণ দেশ গুলোতে
পাড়ি জমায়। যে দেশ গুলোতে সহজে খাবার পাওয়া যায়,
তাদের জীবন ধারণ সহজ হয় এরকম দেশ গুলোতে অতিথি পাখিরা আসে। যে দেশগুলোতে প্রচুর
পরিমাণে তুষারপাত হয় ওই দেশগুলো থেকে অতিথি পাখি মূলত বাংলাদেশ সহ আশেপাশের উষ্ণ
দেশগুলোতে আসে। অতিথি পাখি খাবারের চাহিদা পূরণ করতে ও অতিরিক্ত শীত থেকে
আত্মরক্ষা করতে উষ্ণ অঞ্চলে আসে।
লেখকের মন্তব্য
অতিথি পাখি আমাদের দেশের অতিথি স্বরূপ। অতিথি পাখি আমাদের দেশের পরিবেশের
ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই অতিথি পাখি আমাদের রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অতিথি পাখি আমাদের দেশে যখন আসে তখন আমাদের দেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়। দেখতে কতই
না সুন্দর লাগে। আজকের পুরো আর্টিকেলটিতে অতিথি পাখির নামের তালিকা ও অতিথি পাখি
কোন দেশ থেকে আসে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য শেয়ার করেছি।
অতিথি পাখি সম্পর্কে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে সে ক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে
জানাতে পারেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ
আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েব সাইটে ভিজিট করুন। অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের
ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url