কোয়েল পাখির ডিমের ১০টি ক্ষতিকর দিক
কোয়েল পাখির ডিম অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার। অন্যান্য ডিমের চাইতে কোয়েল
পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। কোয়েল পাখির ডিমের সাইজ আকারে ছোট হলেও
অন্যান্য ডিমের চাইতে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের
উপকারিতা অনেক। উপকারিতার পাশাপাশি কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে। তবে
সব বয়সী ব্যক্তিদের জন্য কোয়েল পাখির ডিম ক্ষতিকর নয়।
কোয়েল পাখির ডিম উচ্চ প্রোটিন সম্পূর্ণ। কোয়েল পাখির ডিমে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে প্রোটিন ভিটামিন ও মিনারেল। নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেলে শরীরের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের
উপকারিতা প্রচুর। তবে কিছুসংখ্যক ব্যক্তির ক্ষেত্রে কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর
দিক লক্ষ্য করা যায়। কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা, অপকারিতা, ক্ষতিকর দিক,
কোয়েল পাখির ডিম সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয়ে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক - গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
- শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
- কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম
- কোয়েল পাখির ডিমের দাম
- কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ
- কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
- কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যায়
- কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি হয়
- কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
অনেক গর্ভবতী মায়েরা গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেতে পছন্দ করেন। তাই
নিয়মিত গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেয়ে উপকারিতা সম্পর্কে জানতে,
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। গর্ভাবস্থায়
কোয়েল পাখির ডিম খেলে বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে গর্বের শিশু ও গর্ভবতী মা উভয়ের জন্যই
উপকারী। গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা গুলো নিচে পয়েন্ট আকারে
দেওয়া হলঃ
- প্রোটিন সরবরাহ করে
- রক্তস্বল্পতা দূর করে
- শিশুর মস্তিষ্ক গঠনের সহায়ক
- ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ
- শরীরের শক্তি যোগায়
- হজম শক্তি উন্নত করে
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
প্রোটিন সরবরাহ করেঃ কোয়েল পাখির ডিম উচ্চমানের প্রোটিনের উৎস।
কোয়েল পাখির ডিমে থাকা প্রোটিন গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর শরীরের কোষ, পেশী,
টিস্যু গঠনের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। এই প্রোটিন গুলো শিশুর বৃদ্ধির পাশাপাশি
মায়ের শরীরের ক্ষতিকর কোষ মেরামত করতে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা হলো
শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে। কোয়েল পাখির ডিমে আয়রনের পরিমান বেশি থাকে যা
শরীরে রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। এটি গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর
করে ও শিশুর পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে।
শিশুর মস্তিষ্ক গঠনের সহায়কঃ কোয়েল পাখির ডিম শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে
সাহায্য করে। কোয়েল পাখির ডিমে থাকা কোলিন, ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড শিশুর মস্তিষ্কের
গঠন ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই উপাদানগুলো শিশুর
মস্তিষ্কের স্মরণশক্তি বৃদ্ধি ও শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করেঃ কোয়েল পাখির ডিম গর্ভবতী মায়ের
ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে। কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম
থাকে। যা গর্ভাবস্থায় শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠন শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এটি
মায়ের হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে এবং অস্টিওপেরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের
উপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে। কোয়েল
পাখির ডিমে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, ও পুষ্টি উপাদান
যা গর্ভবতী মায়ের শরীরের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে। এই উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়ের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধঃ কোয়েল পাখির ডিমে ভিটামিন ডি রয়েছে। কোয়েল
পাখির ডিম ভিটামিন ডি থাকায় শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণের সাহায্য করে। এই ভিটামিন
ডি মা ও শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠন সুস্থ রাখার পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
সাহায্য করে।
শরীরের শক্তি যোগায়ঃ কোয়েল পাখির ডিম শরীরের শক্তি যোগায়। বিশেষ
করে গর্ভাবস্থায় ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর করতে কোয়েল পাখির ডিম অত্যন্ত উপকারী।
কোয়েল পাখির ডিমে থাকা প্রোটিন ও পুষ্টি উপাদান শরীরকে শক্তিশালী ও কর্মক্ষম
রাখতে সাহায্য করে।
হজম শক্তি উন্নত করেঃ কোয়েল পাখির ডিম শরীরের হজম শক্তি উন্নত করে।
কোয়েল পাখির ডিমে থাকা প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান হজম শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ কোয়েল পাখির ডিম কম ক্যালরিযুক্ত।
কোয়েল পাখির ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এটি শরীরের অতিরিক্ত ওজন
বাড়তে দেয় না। এটি গর্ভাবস্থায় সুস্থ ওজন বজায় রাখে ও শিশুর স্বাভাবিক
বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
প্রিয় পাঠক উপরে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা গুলো আপনাদের
জানিয়েছি। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত
উপকারী যা বলে শেষ করার মত নয়। তাই আপনি গর্ভাবস্থায় সঠিক নিয়মে নিয়মিত সেদ্ধ
কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন। আশা করি গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
গুলো জানতে পেরেছেন।
শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
অনেকে নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক ও শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের
উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। কোয়েল পাখির ডিম শিশুদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কোয়েল পাখির ডিম শিশুদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। কোয়েল পাখির ডিম আকারে ছোট
হলেও পুষ্টিগুণে ভরপুর। কোয়েল পাখির ডিম শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রথমত কোয়েল পাখির ডিম উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ যা শিশুর পেশী গঠন ও দেহের কোষ
মেরামতে সাহায্য করে। কোয়েল পাখির ডিমে থাকা ওমেগা ৩ ফাটি এসিড ও কোলিন শিশুর
মস্তিষ্কের বিকাশের সাহায্য করে ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি হয়। শিশুদের জন্য কোয়েল
পাখির ডিমের উপকারিতা প্রচুর। নিচে শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
গুলো পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলঃ
- প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক
- মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়
- রক্তস্বল্পতা দূর করে
- হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে
- দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী
- শিশুর শারীরিক বিকাশে সাহায্য করে
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। বিশেষ করে
শিশুদের ক্ষেত্রে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ানোর জন্য সচেতন হতে হবে। কোয়েল পাখির
ডিম উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ। কোয়েল পাখির ডিম অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যা হয়। ফলে
শিশুর বদহজম ও পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা অথবা পায়খানা হতে পারে।
তাই শিশুকে দিনের সর্বোচ্চ ১-২টি ডিম খাওয়াতে পারেন। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে
দিনে সর্বোচ্চ ৪টি কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন। কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পূর্বে
অবশ্যই কোয়েল পাখির ডিম কমপক্ষে ১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। কোয়েল পাখির ডিম অর্ধ
সেদ্ধ অথবা কাঁচা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কোয়েল পাখির ডিম ভেজে খাওয়ার চাইতে সেদ্ধ করে খেলে সকল পুষ্টি উপাদান পাওয়া
যায়। কোয়েল পাখির ডিম অতিরিক্ত খেলে পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাই
পরিমিত মাত্রায় কোয়েল পাখির ডিম শিশুকে অথবা আপনি খেতে পারেন। কোয়েল পাখির ডিম
রাতে ঘুমানোর পূর্বে অথবা দুপুরে খাবার খাওয়ার পূর্বে খেতে পারেন।
শিশুদের ক্ষেত্রে সকালের নাস্তার সময় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ালে সবচাইতে ভালো
উপকার পাওয়া যায়। প্রাপ্তবয়স্করা দিনের যে কোন অংশে কোয়েল পাখির ডিম খেতে
পারেন। তবে দুপুরে খাবার খাওয়ার পূর্বে অথবা সকালে নাস্তা টেবিলে কোয়েল পাখির
সেদ্ধ ডিম খেলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাবেন।
কোয়েল পাখির ডিমের দাম
অনেকে নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিমের দাম সম্পর্কে জানতে চান। কোয়েল পাখির ডিমের
দাম অন্যান্য ডিমের চাইতে অনেক কম। কোয়েল পাখির ডিম সারা বছরে পাওয়া যায়। তবে
শীতকালীন সময় কোয়েল পাখির ডিম সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। সময় ও স্থানভেদে
কোয়েল পাখির ডিমের দাম কমবেশি হয়।
গ্রীষ্মকালীন সময়ে কোয়েল পাখির ডিমের দাম বেশি ও শীতকালীন সময় কোয়েল পাখির
ডিমের দাম কম হয়। কোয়েল পাখির ১০০ পিচ কাঁচা ডিমের দাম ৩০০ টাকা। প্রতি পিঠ
ডিমের দাম ৩ টাকা বিক্রয় হয়। তবে কিছু কিছু সময় ৩০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয়
হয়। সময় ও স্থানভেদে কোয়েল পাখির ডিমের দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
আপনি সরাসরি কোয়েল পাখির খামার থেকে কোয়েল পাখির ডিম কিনলে এর চাইতেও কম দামে
কিনতে পারবেন। বাজারে কোয়েল পাখির সেদ্ধ ডিম বিক্রয় হয় প্রতি পিচ ৫-৬ টাকা।
কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ
কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কোয়েল
পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। কোয়েল পাখির ডিমে
বেশ কিছু পুষ্টিগুণ, পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বিশেষ করে কোয়েল পাখির ডিমে প্রোটিন,
ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস,
আয়রন, জিংক, অ্যামিনো এসিড, এছাড়া অন্যান্য উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করে। ক্যালসিয়ামের
চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি, শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত রাখে।
কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
অনেকেই নিয়মিত জানতে চান কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে। আপনাদের প্রশ্নের
উত্তর কোয়েল পাখির ডিমে এনার্জি নেই। কোয়েল পাখির ডিমে এলার্জি প্রতিরোধই
উপাদান রয়েছে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কোয়েল পাখির ডিম এলার্জি প্রতিরোধ
করতে সাহায্য করে। যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের এই সমস্যা কমাতে কোয়েল
পাখির ডিম সাহায্য করে।
কোয়েল পাখির ডিমে যে উপাদানগুলো রয়েছে তা এলার্জির সমস্যা কমাতে কার্যকরী। তাই
আপনি নির্দ্বিধায় কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন। এটি শরীরের এলার্জির সমস্যা
বৃদ্ধি করে না।
কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যায়
অনেকেই কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক ও কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া
যায় সে সম্পর্কে জানতে চান। কোয়েল পাখির ডিম অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ। অতিরিক্ত
খেলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত পুষ্টি শরীরের জন্য
ক্ষতিকর। বিশেষ করে বদহজম এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন ১-২ টি খাওয়া প্রয়োজন। তবে সপ্তাহে
কয়েক দিন বাদ রেখে খাওয়া সবচেয়ে ভালো। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন
২-৩টি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া প্রয়োজন। তবে সপ্তাহে ১-২ দিন বাদ রেখে খাবেন।
প্রতিদিন কোয়েল পাখির ডিম খেলে শরীরে অতিরিক্ত পুষ্টি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি
করতে পারে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি হয়
কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি হয় তা অনেকেই জানেন না। কোয়েল পাখির ডিম শরীরের
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। বিশেষ করে কোয়েল পাখির ডিম শরীরের
প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। কোয়েল পাখির ডিমে থাকা উপাদান স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে
সহায়ক। শিশুদের ক্ষেত্রে কোয়েল পাখির ডিম মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়। কোয়েল পাখির
ডিম শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে।
নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে। কোয়েল পাখির ডিমে
রয়েছে ভিটামিন এ যা চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। কোয়েল পাখির ডিমে থাকা উপাদান
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। কোয়েল পাখির ডিম অত্যন্ত
পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক
অনেকে নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খান তাই কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে
জানতে চান। কোয়েল পাখির ডিমের যেমন প্রচুর উপকারিতা রয়েছে এমনি কোয়েল পাখির
ডিমের উপকারিতা অথবা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তবে সঠিক নিয়মে খেলে এই ক্ষতিকর দিক
এড়াতে পারবেন। নিচে কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক গুলো পয়েন্ট আকারে দেওয়া
হলঃ
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর
- অতিরিক্ত কোলেস্টেরল
- হজমের সমস্যা
- ওজন বাড়ার ঝুঁকি
- অতিরিক্ত প্রোটিনের প্রভাব
- অতিরিক্ত ভিটামিন ডি
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকরঃ কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক
গুলোর মধ্যে একটি হলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর
পরিমাণে কোলেস্টেরল ও প্রোটিন থাকে যা ডায়বেটিস রোগীদের রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে। অতিরিক্ত রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে সমস্যার সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের
জন্য অত্যন্ত মারাত্মক।
অতিরিক্ত কোলেস্টেরলঃ কোয়েল পাখির ডিম ও অতিরিক্ত কোলেস্টেরল
রয়েছে। কোয়েল পাখির ১০০ গ্রাম ডিমে ৮৪৪ মিলি গ্রাম কোলেস্ট্রল থাকে যা আমাদের
স্বার্থের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই অতিরিক্ত কোলেস্ট্রল যেকোনো বয়সের
ব্যক্তিদের ক্ষতি করতে পারে।
হজমের সমস্যাঃ কোয়েল পাখির ডিম অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যা হয়।
কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে যা হজমের সমস্যা তৈরি
করে। ফলে পেট ফোলা, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক এর মত সমস্যা তৈরি হয়।
ওজন বাড়ার ঝুঁকিঃ কোয়েল পাখির ডিম অতিরিক্ত খেলে কোয়েল পাখির ডিমে
থাকা ক্যালোরি শরীরের অতিরিক্ত ওজন বাড়ায়। ফলে শরীরে ধীরে ধীরে ওজন বৃদ্ধি
পায়।
অতিরিক্ত প্রোটিনের প্রভাবঃ কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক গুলোর
মধ্যে একটি হলো অতিরিক্ত প্রোটিনের প্রভাব। কোয়েল পাখির ডিমে অতিরিক্ত প্রোটিন
রয়েছে। অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের কিডনি, যকৃত ও অন্যান্য অংশের উপর চাপের সৃষ্টি
করে যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত ভিটামিন ডিঃ কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
রয়েছে যা শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণের সাহায্য করে। অতিরিক্ত ভিটামিন ডি
ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে। অতিরিক্ত ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য
অত্যন্ত ক্ষতিকর।
প্রিয় পাঠক উপরে বেশ কিছুকোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আপনাদের
জানিয়েছি। আশা করি এই সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন। তাই নিয়মিত সঠিক
মাত্রায় কোয়েল পাখির ডিম খান। অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম কখনোই খাবেন না। এটি
আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
আজকের পুরো আর্টিকেলটিতে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা, কোয়েল পাখির
ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি আশা করি বিষয়গুলো জেনে উপকৃত
হবেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল
পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
অন্যান্য ইনফরমেশন সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি গুলো
ঘুরে আসুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url