কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে

অনেক শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর সংসারিক কাজের জন্য, অথবা কোন বেসরকারি চাকরির জন্য লেখাপড়া বাদ দেন। পরবর্তীতে কয়েক বছর পর তারা আবার চান অনার্সে ভর্তি হতে। কয়েক বছর পর অনার্সে ভর্তি হবেন বলে কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে সে সম্পর্কে খোঁজ করেন। কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায় সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। আজকের আর্টিকেলটিতে অনার্সের প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি সম্পর্কে থাকছে বিস্তারিত।
কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে
বেশ কিছু শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে অথবা অন্যান্য কারণে অনার্স করার সুযোগ পাননি। আপনি চাচ্ছেন কয়েক বছর পর অনার্স করবেন। তাই আপনার মনে প্রশ্ন হচ্ছে কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে, কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়। তাই অনার্সের ভর্তি সম্পর্কিত প্রত্যেকটি বিষয়ে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে - কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়

  • কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে
  • কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়
  • অনার্সে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা
  • অনার্সে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগবে
  • অনার্সে ভর্তি হতে কি কি কাগজ পত্র লাগে
  • অনার্সে কতবার আবেদন করা যায়

কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে

অনেকে নিয়মিত খোঁজ করেন কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে সে সম্পর্কে। কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে এটি নির্ভর করে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হবেন তার ওপর। কেননা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে ভর্তি হওয়ার ও গ্যাপ দেওয়ার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ঃ সাধারণত এইচএসসি পরীক্ষার পর সর্বোচ্চ ২-৩ বছরের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে হয়। অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে গ্যাপের সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর সর্বোচ্চ ৩ বছর গ্যাপ দিয়ে ভর্তি হতে পারবেন। জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও একই নিয়ম রয়েছে। তবে সময়ের পরিবর্তনে কর্তৃপক্ষরা এই নিয়ম পরিবর্তন করতে পারেন।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ঃ গ্যাপের ক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। আপনার যদি এইচএসসি সনদ থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি যত বছরের গ্যাপ হোক না কেন ভর্তি হতে পারবেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্যাপের সীমা তুলনামূলকভাবে কম। তবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার পরে ৫-৬ বছরের গ্যাপ দিয়েও অনার্সে ভর্তি হতে পারবেন।

প্রত্যেকটি কলেজের ওই নির্ধারিত কিছু নীতিমালা রয়েছে। কলেজে কর্তৃপক্ষ এ নীতিমালা গুলো অনুসরণ করে ভর্তি নির্ধারণ করেন। তাই আপনি যে বিষয়ে ও যে কলেজে ভর্তি হতে চাচ্ছেন ওই কলেজের সঠিক নিয়ম ও নীতিমালা জেনে নিন। তবে উপরে কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়েছি আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়

দীর্ঘদিন হয়ে যায় অনেকের এইচএসসি পাশ করে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে লেখাপড়া করেন না। পরবর্তীতে আবার মনে হয় যদি অনার্স পাশ করতাম। তাই অনার্সে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে জাগ্রত হয়। আবার অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে অনার্সে ভর্তি হয় না বয়স বেশি হয়ে যায়, তখন তারা নিয়মিত জিজ্ঞাসা করেন কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায় সে সম্পর্কে। 

অনার্সে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে বয়সের সীমা নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর উপর। সাধারণত ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষানীতির ওপর বয়সের সীমা নির্ধারিত হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার গ্যাপ সহ ২২ বছর বয়স পর্যন্ত ভর্তির সুযোগ থাকে। তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে বয়স সীমা শিথিল হতে পারে। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে বয়সের কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই তবে এইচএসসি পরীক্ষার ৫-৬ বছরের মধ্যে ভর্তি হতে হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বয়সের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। আপনি যে কোন বয়সে ভর্তি হতে পারেন, যদি আপনার যোগ্যতা থাকে। আশা করি কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

অনার্সে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা

অনেকে নিয়মিত কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে ও অনার্সে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চান। ওনার যে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন রকম হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বয়স, ন্যূনতম পয়েন্ট থাকতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বয়স এর কোন নির্ধারিত সীমা নেই তবে ন্যূনতম পয়েন্ট থাকতে হবে। 
কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মানবিক শাখার ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি এই ন্যূনতম ২.৫০ মোট ৬.০০ পয়েন্ট থাকলে ভর্তি হতে পারবেন। বিজ্ঞান শাখার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩ সহ এসএসসি ও এইচ এস সি তে মোট ৬.৫০ থাকতে হবে তাহলে আপনি অনার্সে ভর্তি হতে পারবেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ২২ বছরের মধ্যে, 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ২৪ বছরের মধ্যে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট বয়স সীমা নেই। আপনার এই পরিমাণ যোগ্যতা থাকলেই আপনি অনার্সে ভর্তি হতে পারবেন।

অনার্সে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগবে

কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে, অনার্সে ভর্তি হতে কত পয়েন্ট লাগে তা অনেকেই জানেন না। অনার্সে ভর্তি হতে হলে ভিন্ন ভিন্ন শাখার ক্ষেত্রে ভিন্ন রকম পয়েন্টের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ভিত্তি করে এই পয়েন্টের পরিমাণ কমবেশি রয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে সর্বনিম্ন ৮ পয়েন্ট প্রয়োজন হয়। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে সর্বনিম্ন ৬ পয়েন্টের প্রয়োজন হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই নিয়মের কিছুটা শিথিলতা রয়েছে।

অনার্সে ভর্তি হতে কি কি কাগজ পত্র লাগে

অনার্সে ভর্তি হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো ভর্তি প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য অংশ। শিক্ষার্থীর নির্দিষ্ট কাগজপত্র গুলো শিক্ষার্থীর ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত করে। অনার্সে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সনদপত্র জমা দিতে হয়। 

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ও সনদপত্র জমা দিতে হয়। এছাড়া জন্ম নিবন্ধন সনদ বয়স প্রমাণের অনুলিপি জমা দিতে হয়। পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি জমা দিতে হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিতে প্রবেশপত্র জমা দিতে হবে। ভর্তি হওয়ার জন্য ভর্তি ফি সহ উল্লেখিত ডকুমেন্ট গুলো জমা দিলে অনার্সে ভর্তি হতে পারবেন। নিচে অনার্সে ভর্তি হতে কি কি কাগজপত্র লাগে সেগুলোর তালিকা দেওয়া হলঃ
  • অনলাইন থেকে আবেদনের মূল কপি
  • প্রাথমিক আবেদন ফরম
  • পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি
  • এসএসসি ও এইচ এস সির মূল সনদপত্র ও প্রশংসাপত্র
  • এসএসসি ও এইচ এস সির মূল নম্বর পত্র
  • এসএসসি ও এইচ এস সির রেজিস্ট্রেশন কার্ড
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, জন্ম সনদ, নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট
  • নির্ধারিত ভর্তি ফি

অনার্সে কতবার আবেদন করা যায়

কত বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়, অনার্সে কতবার আবেদন করা যায় এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। অনার্সে কতবার আবেদন করতে পারবেন এটি নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির নীতিমালার উপর। সাধারণত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে একজন শিক্ষার্থী একবার এক নির্দিষ্ট সেশনের জন্য আবেদন করতে পারে। 

ভিন্ন সেশনে বা অন্য কোন ইউনিটে আবেদন করলে আবার আবেদন করার পুনরায় সুযোগ পাবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেমিস্টারের ভিত্তিতে ভর্তি নেয়া হয় তাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে একাধিক বার আবেদনের সুযোগ থাকে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী একটি শিক্ষাবর্ষে একবার আবেদন করতে পারে। 

তবে একবার আবেদন করে যদি সেটি মিস হয় সে ক্ষেত্রে পুনরায় আপনি আরো তিনবার আবেদন করতে পারবেন। দ্বিতীয় মেধা তালিকার ফলাফল প্রকাশ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যদি সিলেক্ট না হন সে ক্ষেত্রে ১ম রিলিজ স্লিপে আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রেও যদি সুযোগ না পান তাহলে ২য় রিলিজ স্লিপে আবেদন করতে পারবেন। 

তবে এ সময় আপনাকে নির্ধারিত ৫ কলেজ পছন্দের তালিকায় দিতে হবে। তাহলে আপনি অবশ্যই যেকোনো একটি কলেজে অনার্সের কোর্স করার সুযোগ পাবেন।

লেখকের মন্তব্য

আজকের আর্টিকেলটিতে অনার্সের ভর্তি সম্পর্কিত প্রত্যেকটি বিষয়ে সঠিক তথ্য শেয়ার করেছি। কত বছর গ্যাপ দিয়ে অনার্স করা যাবে, কত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায় সে সম্পর্কে জানিয়েছি। অনার্স এর ভর্তি সম্পর্কে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে সে ক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। অন্যান্য ইনফরমেশন সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url