কেরোসিন কাঠ - কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার
কেরোসিন কাঠ অত্যন্ত মজবুত ও টেকসই একটি কাঠ। এই কাঠের দ্বারা বিভিন্ন ধরনের
আসবাবপত্র তৈরি সহ জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা হয়। কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার
দীর্ঘদিন টেকসই ও মজবুত হয়। কেরোসিন কাঠ কোথায় পাওয়া যায় কেরোসিন কাঠ
সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে আজকের আর্টিকেলটিতে।
কেরোসিন কাঠ অত্যন্ত মূল্যবান হিসেবে আমাদের বাংলাদেশের লোকেরা চিনেন। কেরোসিন
কাঠ জ্বালানির কাজে ও আসবাবপত্র তৈরিতে বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন কাজে কেরোসিন কাঠের
ব্যবহার করা হয়। যেকোনো আসবাবপত্র তৈরিতে কেরোসিন কাঠ অত্যন্ত জনপ্রিয়। কেরোসিন
কাঠের ফার্নিচার অনেকেরই পছন্দের তালিকায় রয়েছে। কেরোসিন কাঠ কোথায় পাওয়া
যায় কেরোসিন কাঠ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে পুর আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ কেরোসিন কাঠ - কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার
কেরোসিন কাঠ এর সুবিধা
কেরোসিন কাঠ মূলত স্বল্পমূল্যের স্বল্পদামি কাঠ। কেরোসিন কাঠ বিশেষ করে জ্বালানের
কাজে ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি স্বল্পমূল্যের সহজলভ্য কিছু আসবাবপত্র তৈরি করা
হয়। কেরোসিন কার দ্বারা যেকোনো ফার্নিচার তৈরি করা যায়। অন্যান্য কাঠের চাইতে
কেরোসিন কাঠের দাম অনেক কম। তাই সাধারণত এই কাঠ জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা
হয়।
কেরোসিন কাঠের আসবাবপত্র গুলো অন্যান্য কাঠের মত দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তাই
অন্যান্য কাঠের ফার্নিচারের চাইতে কেরোসিন কাঠের ফার্নিচারের দাম অনেক কম। তাই
বিভিন্ন ফার্নিচার বিক্রিতারা স্বল্প মূল্যে বিক্রয়ের জন্য কেরোসিন কাঠের
বিভিন্ন ফার্নিচার তৈরি করেন। কেরোসিন কাঠের বেশ সুবিধা রয়েছে নিচে কেরোসিন
কাঠের সুবিধাগুলো আলোচনা করা হলোঃ
- দ্রুত জ্বলে
- দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানি
- অল্প ধোঁয়া
- সহজে ব্যবহারযোগ্য
- দামে সাশ্রয়ী
দ্রুত জ্বলেঃ কেরোসিন কাঠ দ্রুত জ্বলে, কেরোসিন কাঠে রয়েছে
প্রাকৃতিক তেল। এই তেল তেলে ভাবের কারণে এই কাঠে খুব সহজেই আগুন জলে। এই কাঠ
দ্রুত জ্বরে এবং জ্বালানোর জন্য অল্প দামে পাওয়া যায়। অন্যান্য কাঠগুলোর চাইতে
এই কাঠ কম খরচে সংগ্রহ করে জ্বালানির জন্য ব্যবহার করা যায়।
কেরোসিন কাঠের বিশেষ সুবিধা হল কেরোসিন কাঁচা কাঠ সহজে জ্বালানোর জন্য ব্যবহার
করা যায়। আপনি কেরোসিনের কাঁচা কাঠ যেকোনো রান্নার কাজে অথবা জ্বালা নিতে
ব্যবহার করতে পারবেন।
দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানিঃ কেরোসিন কাঠে প্রাকৃতিক তেল থাকে পাশাপাশি
ভেজা কেরোসিন কাঠ জ্বালানোর কারণে এটি দীর্ঘক্ষণ জলে। ভেজা কাঠ জ্বালালে
দীর্ঘক্ষণ জলে বিধায় জ্বালানি খরচ কম হয়। পাশাপাশি এই কাঠের দাম অত্যন্ত কম তাই
অনেকে জ্বালানির জন্য কেরোসিন কাঠ ব্যবহার করেন।
অল্প ধোঁয়াঃ অন্যান্য কাঠ জ্বালানোর জন্য ব্যবহার করলে প্রচুর
ধোঁয়া হয়। কিন্তু কেরোসিন কাঠ জ্বালানোর জন্য ব্যবহার করলে ধোঁয়ার পরিমাণ নেই
বললেই চলে। কেরোসিন কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে ধোঁয়ার থেকে নিরাপত্তা
পাওয়া যায়। রান্নাঘরে কেরোসিন কাঠের জ্বালানি ব্যবহার করলে কম খরচে রান্না করা
যায়।
সহজে ব্যবহারযোগ্যঃ কেরোসিন কাঠ সহজে ব্যবহার করা যায়। কেননা
কেরোসিন কাঠ দ্বারা সহজেই যে কোন জ্বালানি কার্য পরিচালনা করা যায়। অন্যান্য
কাঠের মত কাট শুকিয়ে জ্বালানির কাজে ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। কেরোসিন কাঠ
বড় ধরনের জ্বালানি কাজে ব্যবহারের জন্য কাঁচা কাঠ ভালো জলে। ইটভাটা, বিভিন্ন
ফ্যাক্টরি, বেকারি, গুলোতে কেরোসিন কাঠ জ্বালানি হিসেবে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার
করা হয়।
দামে সাশ্রয়ীঃ অন্যান্য কাঠের চাইতে কেরোসিন কাঠ দামের সাশ্রয়ী।
কেননা এই কাঠের দ্বারা ফার্নিচার খুব কম তৈরি হয়। এ কাঠের ফার্নিচার গুলো খুব
একটা দীর্ঘস্থায়ী হয় না সহজে ঘুনে আক্রমণ করতে পারে। আদ্র আবহাওয়া কেরোসিন কাঠ
সহ্য করতে পারে না দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই গ্রাহকরা কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার
খুব একটা পছন্দ করেন না।
কিন্তু এই কাঠের ফার্নিচার গুলো দামে সাশ্রয়ী। ফার্নিচার তৈরি হয় না বিধায় এই
কাঠ জ্বালানির কাজে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। কেরোসিন কাঠ সহজে পাওয়া যায়
দামো অত্যন্ত কম।
কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার
কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার সম্পর্কে অনেকে খোঁজ করেন। কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলো
বেশ জনপ্রিয়। কেননা কেরোসিন কাঠের ফার্নিচারের দাম অনেক কম। অন্যান্য কাঠের
চাইতে কেরোসিন কাঠের ফার্নিচারের দাম কম। কেননা কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলো
অন্যান্য কাঠের মত দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
তবে আপনি নির্দ্বিধায় ১০ বছরেরও বেশি সময় কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার ব্যবহার করতে
পারবেন। কেরোসিন কাঠের ফার্নিচারের দাম অত্যন্ত কম। বাজারে বিভিন্ন ধরনের কেরোসিন
কাঠের ফার্নিচার পাওয়া যায়। বিভিন্ন ফার্নিচার বিক্রেতারা ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের
আকর্ষণীয় সব ফার্নিচার গুলো তৈরি করেন। কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলোর মধ্যে
খাট, চৌকি, দরজা, পড়ার টেবিল, ওয়ারড্রব, ড্রেসিং, চেয়ার, ও অন্যান্য সামগ্রী
রয়েছে।
আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কেরোসিন কাঠের যেকোনো ফার্নিচার তৈরি করে নিতে পারেন।
অন্যান্য কাঠের ফার্নিচার গুলোর চাইতে কেরোসিন কাঠের ফার্নিচারের দাম কম। বিধায়
যেকোনো শ্রেণীর ব্যক্তিরা কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার কিনতে পারেন। কেরোসিন কাঠের
ফার্নিচার গুলো ওজনে হাল্কা হয়। ফলে সহজে যে কোন জায়গায় পরিবহন করা
যায়।
যেখানে মেহগনি অথবা সেগুন কাঠের একটি ওয়ারড্রবের দাম ১৮-২৫ হাজার টাকা সেখানে
কেরোসিন কাঠের ওয়ারড্রবের দাম ৪-৬ হাজার টাকা। প্রত্যেকটি ফার্নিচারের ক্ষেত্রেই
কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলো দাম কম। তাই আপনি যদি অল্প টাকায় ফার্নিচার কিনতে
চান সেক্ষেত্রে কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার কিনতে পারেন।
কেরোসিন কাঠ কোথায় পাওয়া যায়
কেরোসিন কাঠ কোথায় পাওয়া যায় তা অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন। আমাদের দেশে কেরোসিন
কাঠ খুব একটা পাওয়া যায় না বললেই চলে। তবে আপনি শহরাঞ্চলের বিভিন্ন ফার্নিচারের
দোকান গুলোতে কেরোসিন কাঠ সহজে পেয়ে যাবেন। কেননা তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে
পাইকারি দামে কেরোসিন কাঠ সংগ্রহ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি করে স্বল্পদামে
বিক্রয় করেন।
তারা দেশের বিভিন্ন থেকে কম দামে কেরোসিন কাঠ সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরনের ফার্নিচার
তৈরি করেন। তবে সাধারণত গ্রাম্য এলাকা গুলোতে ফার্নিচারের দোকানে কেরোসিন কাঠ
পাওয়া যায় না। আপনি যদি কেরোসিন কাঠ কিনতে চান সে ক্ষেত্রে শহর অঞ্চলের
ফার্নিচারের দোকান গুলোতে যোগাযোগ করুন।
কেরোসিন কাঠের দাম
বিভিন্ন সাইজের কেরোসিন কাঠ বিভিন্ন রকম দাম হয়। কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলো
ভিন্ন ভিন্ন রকম দাম। জ্বালানির জন্য যে কেরোসিন কাঠ গুলো বিক্রয় হয় সেগুলো
মূলত ফার্নিচারের উচ্ছিষ্ট অংশ। আবার কেরোসিন কাঠ যেগুলো ফার্নিচার তৈরিতে
ব্যবহার অনুপযোগী ওই কাঠগুলো জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
আঁকাবাঁকা, চিকন, ফাটা, কাকা টুকরো, গুলো কম দামে বিক্রয় হয়। সাধারণত জ্বালানোর
জন্য কেরোসিন কাঠ ১৫০-২০০ টাকা প্রতি মন বিক্রয় হয়। আসবাবপত্র তৈরির জন্য
কেরোসিন কাঠ সেফটি হিসেবে বিক্রয় হয়। কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলো ভিন্ন ভিন্ন
দামে বিক্রয় হয়। কেরোসিন কাঠের চেয়ার ৮০০-২০০০ হাজার টাকায় বিক্রয়
হয়।
কেরোসিন কাঠের ওয়ারড্রব গুলো ৫-৮ হাজার টাকায় বিক্রয় হয়। কেরোসিন কাঠের
ড্রেসিং ৪-৭ হাজার টাকায় বিক্রয় হয়। কেরোসিন কাঠের খাট ৩-১৫ হাজার টাকায়
বিক্রয় হয়। তবে এটির দাম নির্ধারিত হয় আপনি যে ফার্নিচার নিবেন তার ডিজাইনের
উপর, তার নকশার উপর, তার সাইজের উপর। আশা করি কেরোসিন কাঠের দাম সম্পর্কে সঠিক
ধারণা পেয়েছেন।
কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার ভালো
অনেকে কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার ভালো কিনা সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। কাঠের
ফার্নিচার গুলো প্রত্যেকটি ভাল হয়। কাঠের ফার্নিচার গুলো অন্যান্য ফার্নিচারের
চাইতে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। যদি ভালো মানের কাঠ হয় সেক্ষেত্রে কমপক্ষে
২০-২৫ বছর ব্যবহার করতে পারবেন। নরমাল কাঠগুলো ৮-১০ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা
যায়।
কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলো ভালো কিন্তু অন্যান্য কাঠের মত দীর্ঘস্থায়ী হয়
না। কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার গুলো খুব বেশি হলে ৮-১০ বছর যাওয়ার পূর্বেই নষ্ট
হয়ে যায়। কেরোসিন কাঠে খুব সহজেই ঘুনে আক্রমণ করতে পারেন। এটি অত্যন্ত পাতলা ও
নরম আবরণের কাঠ। আপনি যদি ৮-১০ বছর ব্যবহারের কথা ভাবেন তাহলে স্বল্প দামে
কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার কিনতে পারেন।
কেরোসিন কাঠ গাছ
কেরোসিন কাঠ গাছ আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। তবে ফার্নিচার ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন
স্থান থেকে এর কাঠ সংগ্রহ করে থাকেন। কেরোসিন কাঠের গাছ মূলত দক্ষিণপূর্ব এশিয়া,
মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াতে প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। কেরোসিন গাছের কাঠ মূলত
অন্যান্য কাঠের চাইতে কম টেকসই। কেরোসিন গাছের কাঠ নরম আবরণ দ্বারা গঠিত
হয়।
কেরোসিন কাঠ গাছ মূলত তেমন বড় হয় না। এগুলো ছোট ছোট ফুল ও ফুল থেকে ছোট আকারের
ফল ধরে। এই গাছটির কাঠ প্রচুর পরিমাণে জলে বিশেষ করে জ্বালানের কাজে এই কাঠ
ব্যবহৃত হয় ফলে এঁকে কেরোসিন কাঠ বলা হয়।
লেখক এর মন্তব্য
আজকের পুরো আর্টিকেলটিতে কেরোসিন কাঠ ও কেরোসিন কাঠের ফার্নিচার সম্পর্কে সঠিক
তথ্য শেয়ার করেছি। এছাড়া কেরোসিন কাঠ সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা
করেছি। আশা করি বিষয়গুলো জেনে উপকৃত হবেন। কেরোসিন কাঠ সম্পর্কে কেরোসিন কাঠ
সম্পর্কে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে সে ক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে জানাতে
পারেন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে
আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। অন্যান্য ইনফরমেশন সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়তে
আমাদের ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url