ভিটামিন এ উৎস- ভিটামিন এ উপকারিতা
>ভিটামিন এ হলো খাবারের মধ্যে থাকা জৈব অনু। তবে ভিটামিন এ উৎস কোথায়? আজকের
আর্টিকেলে ভিটামিন এ উৎস এবং ভিটামিন এ উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করবো। চলুন
তাহলে জেনে নেই ভিটামিন এ উৎস এবং ভিটামিন এ উপকারিতা সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ভিটামিন এ উৎস- ভিটামিন এ উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
- ভিটামিন এ উৎস।
- ভিটামিন এ উপকারিতা।
- ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন ২০২৩
- ভিটামিন এ ট্যাবলেট।
- ভিটামিন এ জাতীয় সবজি।
- ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগ।
- শেষ কথাঃ ভিটামিন এ উৎস- ভিটামিন এ উপকারিতা
ভিটামিন এ উৎস
ভিটামিন এ এর রাসায়নিক নাম 'রেটিনাল'। মানবদেহে ভিটামিন এ জড়িত হয়েছে
রেটিনোয়িক এসিড থেকে। ভিটামিন এ খাদ্যের একটি খুবই প্রয়োজনীয়। ভিটামিন এ
উৎস মূলত ক্যারোটিন থেকে তৈরি হয়। ভিটামিন এ উৎস তৈরির দুটি উপাদান হলো
১. উদ্ভিদ জাত; ২. প্রাণী জাত।
উদ্ভিদ জাত উৎস হল হলুদ ও সবুজ শাকসবজি রঙিন ফলমূল। সাধারণত যে শাক-সবজি বা ফলের
রঙ যত গাঢ় হয় তাতে ভিটামিন এ এর পরিমাণ তত বেশি হয়। এছাড়া গাজর, কুমড়ো, পাকা
পেঁপে, ঘি, মাখন ও অন্যান্য সবজি ফল ইত্যাদিতে ভিটামিন এ থাকে। এগুলোকে ভিটামিন এ
উৎস বলে থাকে। প্রাণী জাত ভিটামিন এ উৎস হলো মূলত মাংসাশী প্রাণী (হাঙর, কড,
হ্যালিবাট ইত্যাদি মাছের যকৃৎ) মাছের তেল বা তেল যুক্ত মাংস, ডিম ইত্যাদি খাবার
থেকে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
ভিটামিন এ উপকারিতা
ভিটামিন এ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই
প্রয়োজনীয়। শরীরের বিকাশে ভিটামিন এ উপকারিতা রয়েছে । বাহ্যিক আবরণের কোষ,
ত্বক, দাঁত ও অস্থির গঠনের জন্য ভিটামিন এ জরুরী। ভিটামিন এ নানা রকমের সংক্রামক
রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে থাকে। শরীরে প্রাপ্ত লৌহের স্বাভাবিক ব্যবহারের ঘাটতি
হয় না ভিটামিন এ শরীরে থাকলে।
ফলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় না। শরীর সুস্থ থাকে, ভিটামিন এ বার্ধক্য রোধ করতে
সহায়ক। তবে শুষ্কতা বা বলি রেখা ভিটামিন এ এর দ্বারা থাকে না। ত্বক ভালো রাখে,
সাথে টিউমার ও ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন এ লিভার ভালো রাখে। ভিটামিন এ
আমাদের নাকের শ্লেষা ঝিল্লীকেও সুস্থ রাখে। ভিটামিন এ উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেল টি পড়ুন।
ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন ২০২৩
শিশুদের জন্য জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে (বুধবার ১৫ জুন)
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ
মালিক। এ ক্যাম্পেইন 15 থেকে 19 জুন প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত
চলবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন ভিটামিন এ দেহের
স্বাভাবিকের সহায়তা কর,
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। সেই সঙ্গে শিশুর
স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি বাঁজায় রাখে। ফলে শিশু রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা পায়।
ক্যাম্পেইন চলাকালে স্বার্থ কমিটি মেনে ৬ মাস থেকে ৫ বছরের শিশুকে নিকটস্থ ইপিআই
ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এ সময় দেশের ছয় থেকে ১১ মাস বয়সের ২৪ লাখের বেশি শিশুকে নীল রংয়ের একটি করে
ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আর 12 থেকে 59 মাস বয়সের প্রায় ১ কোটি ৯৬
লাখের বেশি শিশুকে লাল রংয়ের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এছাড়াও জন্মের পর
(এক ঘণ্টার মধ্যে) শিশুকে শাল দুধ খাওয়ানো সহ প্রথম ছয় মাস শুধু মাত্র মায়ের
দুধ খাওয়ার বিষয় দৃষ্টি প্রচার করা হবে।
এবারের ক্যাম্পেইন চলাকালে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রের
মাধ্যমে শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। প্রতি কেন্দ্রে দুজন করে মোট
দুই লাখ আশি হাজার স্বেচ্ছাসেবক এই কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকবেন। ১২টি জেলার ৪৬ টি
উপজেলা ২৪০ টি ইউনিয়নকে দুর্গম এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে ক্যাম্পেইন পরবর্তী
চারদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাদ পড়া শিশু অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ভিটামিন এ ট্যাবলেট
সাধারণত আমাদের শরীরে ভিটামিন অত্যন্ত জরুরি কিছু উপাদান এবং দেহের পর্যাপ্ত
বৃদ্ধি ও সুস্থ থাকার শক্তি হিসেবে এই ভিটামিন এ সব সময় কাজে আসে। ভিটামিন এ
উপকারিতা কি কি এবং ভিটামিন এ উৎস গুলো কি কি সেগুলো মোতাবেক খাবার খেতে হবে।
যাতে শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব না থাকে। সব থেকে বড় ভিটামিন এ উৎস হলো আমাদের
দৈনন্দিন খাবার এবং সেই খাবার থেকে যখন আমরা ভিটামিন পুরোপুরি গ্রহণ করতে না
পারি, তখন অবশ্যই ভিটামিন খেতে হয়।
তবে ভিটামিন এ একটি সাংঘাতিক জিনিস যেটা যদি শরীরে বেশি হয়ে যায় তাহলে যে কোন
সময় আপনি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। তাই সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী ভিটামিন গুলো খাওয়া উচিত। আজকে আমরা যে ভিটামিন এর কথা বলছি সেটা হচ্ছে
ভিটামিন এ এবং শক্তিশালী ভিটামিন স্নায়ুতন্ত্র কেও সুস্থ রাখতে সাহায্য
করে।
একটি গবেষণা যেটা আমেরিকার প্রচলিত হয়েছে এবং ক্যান্সার ইনস্টিটিউশনে এ গবেষণা
বলা হয়েছে যারা ধূমপান করে তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়া
ফুসফুসে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন এ ট্যাবলেট
লিভারের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। তাই ট্যাবলেট হাতে তুলে নিয়ে পর্যাপ্ত
ভিটামিন এ পেতে আপনাকে খাবার উপাদান গুলির উপর বেশি নির্ভরশীল হতে হবে।
এ থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারলাম যে ভিটামিন এ ট্যাবলেট এর যে ওষুধ গুলো
বাজারে পাওয়া যায় অবশ্যই সে ওষুধ গুলো আপনি চাইলে খেতে পারবেন না। তার কারণ হলো
এই ওষুধ গুলো যদি বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার সমস্যা হতে পারে। এছাড়া ভিটামিন
এ একটি শক্তিশালী একে এন্টিঅক্সিডেন্ট। এ ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ও স্নায়ুতন্ত্রের
কার্যক্রমে ভূমিকা পালন করে এবং ছোটবেলা থেকে শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন এ জাতীয় সবজি
শরীরের সামগ্রিক গঠনে ভিটামিনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ভিটামিন ছাড়া আমাদের
পুস্টির সব সময় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই প্রতিদিনই আমাদের কোনও না কোনও উপায়
ভিটামিন গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। যদিও আমরা সবাই এই ভিটামিন গ্রহণ করেই থাকি।
তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই ঠিক এটা জানে না যে কোন খাবার ভিটামিন এ উৎস বা কোন
খাবার থেকে কোন ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ
বেশি কান্না করলে চোখের কি ক্ষতি হয়
হেলথলাইন থেকে সংকৃত তথ্যের ভিত্তিতে আজ আপনাদের সেই সম্বন্ধে সম্মুখ ধারণা
দেওয়া হলো। এই প্রতিবেদনে আসুন দেখে নেয়া যাক প্রতিদিনের কোন খাবার থেকে
ভিটামিন এ উৎস পাওয়া যায়। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায় । দেখতে
ছোট হলেও মলা মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। তেল, ক্যারোটিন সমৃদ্ধ
শাকসবজি, বিভিন্ন প্রকার রঙিন ফলমূল ও প্রাণীজ স্নেহের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ
পাওয়া যায়। ভিটামিন এ উৎস গুলো হলো-
শাকসবজিঃ লাল শাক, পুঁই শাক, পালং শা, লাউ, টমেটো, ব্রকলি
গাজর, ফুলকপি, বিট, মিষ্টি আলু ও মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি।
মাছঃ মলা ও ঢেলা মাছে ও কড মাছের যকৃৎ তৈল।
ফলমূলঃ পাকা পেঁপে, আম, কাঁঠাল, বেল, আপেল, কলা, তরমুজ ইত্যাদি ফল।
ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগ
ভিটামিন এ শরীরে কম থাকলে যে রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেটি হল 'রাতকানা' রোগ।
ভিটামিন এ এর অভাবে এই রোগ সাধারণত হয়ে থাকে। রাতকানা রোগ হলে রোগী দিনের বেলায়
আলোতে স্বাভাবিক চলাফেরা করে। কিন্তু রাতের বেলায় দেখতে অসুবিধা হয়। অনেকে
রাতকানা রোগের জন্য রাতে একেবারে দেখতে পায় না। আবার অনেকে ভুল দেখে।
ভিটামিন এ শরীরে কম থাকলে শরীরে প্রাপ্ত লৌহের স্বাভাবিক ভাবে ব্যবহার করে।
রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় যার থেকে অ্যানিমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ভিটামিন
এ এর অভাব হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। কম বয়সে মুখে বলি রেখা দেখা যায়।
বার্ধক্য জনিত সমস্যা তৈরি হয়। eye গবেষণা থেকে থেকে জানা গিয়েছে যে ২১ শতাংশ
মানুষের শরীরে টিউমার বা স্কিন ক্যান্সার হয় ভিটামিন এ এর অভাবে। মূলত এইডস ও
স্তন ক্যান্সার হয়।
তাছাড়া নিঃশ্বাসের সমস্যা, ভ্রুণের সমস্যা, চুল পরার সমস্যা হয়ে থাকে ভিটামিন এ
এর অভাবে। আমরা সাধারণত যে খাবার খেয়ে থাকি তার থেকে ভিটামিন এ এর চাহিদা অনেকটা
পূরণ হয়ে। যায় বাকি ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খেয়ে থাকতে পূরণ করা হয়।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণ করা উচিত নয়। অতিরিক্ত ভিটামিন এ শরীরের
বিকাশে খারাপ প্রভাব ফেলে। মাংসপেশী শিথিল হয়ে যায়, লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনের
ব্যাঘাত ঘটে,
মাসিক রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। লিভারের সমস্যা দেখা দেয়, ত্বক খসখসে হয়ে যায়।
মানবদেহে ভিটামিন এ এর প্রয়োজন আছে। তবে শরীরের দরকারে মাত্রা অনুযায়ী। শিশু,
মহিলা, পুরুষ সকলের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন এ যোগান থাকা উচিত। আমাদের
মূলত ভিটামিন এ উৎস গুলোর উপর বেশি নির্ভর হওয়া সব থেকে প্রয়োজন। এবং সেই অনুযায়ী
নিয়মিত ভিটামিন ু সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
শেষ কথাঃ ভিটামিন এ উৎস- ভিটামিন এ উপকারিতা
এই আর্টিকেলটি মূলত ভিটামিন উৎস ও ভিটামিন এর উপকারিতা নিয়ে আপনারা যারা
ভিটামিন এর উৎস এবং ভিটামিন এ এর উপকারিতা খুঁজছেন তারা এই আর্টিকেলটি
ভালোভাবে পড়তে পারে আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে আর আপনারা যদি ভিটামিন এর
আরো কিছু জানতে চান তাহলে তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url